জিভ হাড় বিহীন এক টুকরো মাংস।অথচ কত অসাধারণ এই জিভ সকল স্বাদ আর বিস্বাদ অনুভবের এক ইন্দ্রিয়।আমাদের ভিতরকার অনেক রোগ এই জিভ দেখে বুঝা যায়।জিভের কালো দাগ ইদানিং অনেক বেশি পরীলক্ষিত।
জিভের এই কালো দাগের অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি কারণ জিভের যত্ন না নেওয়া।
এছাড়াও রয়েছে দেহের ভিতরকার কোন ইনফেকশান।তবে বিশেষজ্ঞরা মতে কেউ যদি জিভ ভালোভাবে পরিষ্কার না করে তাহলে জিভে খাবার জমে ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয় আর ব্যাকটেরিয়ার কারণে স্বাস্থ্য খারাপ হতে পার। মৃত কোষ, ব্যাকটেরিয়া, খাবার ভালোভাবে পরিষ্কার না হওয়া ইত্যাদি কারণে জিভে কালো দাগ দেখা দেয়।
আমরা উপরে জিভের কালো দাগের কারণ সম্পর্কে জেনেছি।আমরা কেবল কারণ জানিয়ে আপনাদের সান্ত্বনা দিতে চাচ্ছি না।আমরা আরেকটু সামনে যাই যেখানে জানতে পারবেন জিভের কালো দাগ দূর করার উপায়।যা আপনি ঘরে বসেই এই স্বাস্থ্য চর্চা করতে পারেন-
অ্যালোভেরা বা ঘৃত কুমারীর জেল
ইদানিং অ্যালোভেরার নানাবিধি ব্যবহার পরিলক্ষীত বিশেষ করি রূপচর্চা।তবে এই অ্যালোভেরা একটি ঔষুধিগুণসম্পন্ন একটি উদ্ভিদ।এই অ্যালোভেরার ব্যাবহারে দূর করতে পারেন জিভের কালো দাগ।অ্যালোভেরা কোলাজেন কাঠামোর উন্নতি করে দাগ দ্রুত নিরাময় করতে সহায়তা করে। জিভের কালো দাগে অ্যালোভেরা জেল লাগালে দাগ ধীরে ধীরে চলে যাবে। অ্যালোভেরা জুসও খেতে পারেন।
দারুচিনি ও লবঙ্গ
দারুচিনি ও লবঙ্গ আমাদের শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে বেশ উপকারি ভূমিকা রাখে। দারুচিনি ও লবঙ্গ ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে খুবই কার্যযকরী।যেহেতু ব্যাকটেরিয়া সংক্রমনে কালো দাগ হয় সেহেতু জিভের কালো দাগ দূর করতেদারুচিনি ও লবঙ্গ কার্যকর।
ব্যবহারবিধি
দুই টুকরো দারুচিনি ও চারটি লবঙ্গ নিন। এক গ্লাস পানিতে ভালো করে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করুন। তারপর সেই পানি দিয়ে কুলকুচি করুন। দিনে দুবার করলে জিভের কালো দাগ দূর হবে।
নিম
গ্রামের একটি প্রাচীন কথা রয়েছে “যে বাড়িতে একটি নিমগাছ রয়েছে ঐ বাড়িতে নিরব এক ডাক্তার উপস্থিত “।গ্রামের মানুষের কথা কী ভুল?মোটেও ভুল নয়। নিম গাছ ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে কার্যকরী।নিমের পাতা থেকে চামড়া সবকিছুই ঔষুধি গুণসম্পন্ন।চর্মরোগ নিমের ব্যবহার অনিস্বীকার্য।এটি আমাদের দেহের ব্যাকটেরিয়া গঠিত যেকোন দাগ দূর করতে সহায়ক। কয়েকটি নিমপাতা এক কাপ পানিতে ভালো করে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে মুখ ধুলে জিভের কালো দাগ চলে যাবে। দিনে দুবার কুলকুচি করুন। ভালো ফল মিলবে।
নরমটুথব্রাশ
বাজারে এখন উন্নত থেকে অনুন্নত মানের অনেক ধরণের টুথ পেস্ট পাওয়া যায়।আপনি যে টুথপেস্টটা ব্যবহার করছেন আশা রাখি সেটাও উন্নত।দাত ব্রাশের সময় টুথ ব্রাশ দিয়ে হালকা ভাবে জিভ ঘষুন।এতে জিভ পরিষ্কার হবে এবং জিভের সংক্রমনকারী ব্যআকটেরিয়া ধ্বংস করতে টুথপেস্ট ভালো ভূমিকা রাখে।
আনারস
আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন যা কালো জিভের দাগ দূর করে এবং জিভকে মৃত ত্বকের কোষ থেকে মুক্তি দেয়। নিয়মিত আনারস খেলে জিভের কালো দাগ দূর হয়।
মুখের ঘা প্রতিকারে করণীয় কি আজকে আমরা সে সম্পর্কে জানবো। কিভাবে মুখের ঘা ভেষজ উপায়ে চিকিৎসা করা যায় আমরা এখন সে সম্পর্কে জানবো।
তার আগে জেনে নেওয়া যাক মুখের ঘা কেন হয়?
মুখের ঘা হওয়ার অন্যতম একটি কারণ কোন কিছু হতে আঘাত প্রাপ্ত হওয়া।
তাছাড়া পর্যাপ্ত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার না খেলে।
মুখের যত্ন নিয়মিত না নিলে।
পান, সাদা পাতা, জর্দা ও সিগারেট সেবন করলে।
তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদি কিছু রোগের কারণেও এই মুখে ঘা হতে পারে।
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য জানতে ভিজিট করুন- স্বাস্থ্য
এবার আমরা জেনে নিবও কিভাবে মুখের ঘা প্রতিকার করা যায় ভেষজ উপায়ে-
অ্যালোভেরা জেল
মুখের ঘা এর ব্যাথা নাশের জন্য অ্যালোভেরা জেল খুবই উপকারী।
দ্রুত ফল পাওয়ার জন্য ক্ষতস্থানে অ্যালোভেরা জেল লাগান।
তুলসীপাতা
ঘা প্রতিরোধের তুলসীপাতা খুবই কার্যকর। কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ক্ষত সারতে দারুণ কার্যকর।
ব্যবহারের নিয়ম, তুলসীপাতা চিবিয়ে খেতে পারেন।
তাছাড়া তুলসিপাতার সঙ্গে দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন।
লবণ-পানি
এটি খব সহজ উপদেয় এবং সকলের বাসায় এই উপাদানটি খুব সহজে পাওয়া যায়।
যেহেতু লবণ ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করে। তাই মুখের ঘা প্রতিরোধে এটি খুবই কার্যকরী।
তাছাড়া লবণ উষ্ণ পানি মাউথওয়াশ হিসেবেও কাজ করে লবণ এবং ব্যাকটেরিয়া ও মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।
রসুন
রসুনের অনেক ঔষুধি গুণের কথা শুনেছি তার মধ্যে রসুনের একটি ঔষুধি গুণ হলো এটি মুখের ঘা রোধে খুবই উপকারী।
তাছাড়া রসুনে রয়েছে অ্যালিসিন নামক উপাদান যা ব্যথা দূর করে এবং ক্ষতস্থান কমিয়ে আনে।
ব্যবহারের নিয়ম,রসুনের কোয়া ক্ষতস্থানে ঘষুন, এতে ক্ষত স্থান প্রতিকারে সাহায্য করবে।
নারকেল তেল
নারকেল তেলে যা ক্ষত স্থান সারাতে খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কারণ নারেকেল তেলে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি-ভাইরাল উপাদান, যা মুখের ঘা প্রতিরোধে সহায়ক। ক্ষতস্থানে নারকেল তেল লাগান এবং এটি দ্রুত ব্যথানাশে সহায়ক।
মধু
মুখের ঘা প্রতিরোধে মধু খুবই কার্যকর। কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। মধু ক্ষতস্থান এলাকা আর্দ্র রাখে।
ব্যবহারের নিয়ম, মধুর সঙ্গে একটু হলুদ মিশিয়ে লাগালে দ্রুত উপশম হয়। ভালো ফলের জন্য দিনে তিন-চার বার মধু লাগাতে পারেন।